অবৈধ স্মার্ট পণ্য আমদানিতে কঠোর পদক্ষেপ দাবি

Dhaka Post

প্রতিবছর দেশে ৩০ লাখ মেট্রিক টন ই-বর্জ্য সৃষ্টি হচ্ছে। যার মধ্যে শুধু স্মার্ট ডিভাইসেই সাড়ে ১০ টন। টেলিভিশন থেকে সৃষ্টি হচ্ছে ১.৭ লাখ টনের মতো ই-বর্জ্য। জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প থেকে আসছে ২৫ লাখ টনের বেশি। ২০২৫ সাল নাগাদ কোটি টনের ই-বর্জ্যের ভাগাড়ে পরিণত হবে বাংলাদেশ। তাই  অবৈধ স্মার্ট পণ্য আমদানি বন্ধে আইনের কঠোর প্রয়োগ প্রয়োজন।

শনিবার (৩ জুন) বিকেলে বাংলাদেশ আইসিটি জার্নালিস্ট ফোরামের (বিআইজেএফ) উদ্যোগে রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও-এ অনুষ্ঠিত এক গোলটেবিল আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে কানাডিয়ান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশের স্কুল অব সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিন অধ্যাপক ড. সৈয়দ আখতার হোসেন তিনি বলেন, ই-বর্জ্যের কোনো গাইডলাইন নেই। অভিভাবকহীন। এই অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য প্রতিটি পণ্যের সঙ্গে একটি ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনার নীতিমালা তৈরি করা দরকার।

dhakapost

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউল করিম বলেন, ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সময়ের সঙ্গে খুবই প্রাসঙ্গিক। এজন্য সচেতনতা গড়ে তোলার পাশাপাশি ব্যবস্থাপনায় সুনির্দিষ্ট একটি কর্তৃপক্ষ থাকা দরকার। এটা বাস্তবায়নে বিআইজেএফ প্রেশার গ্রুপ হিসেবে কাজ করবে বলে আমি প্রত্যাশা করি।

সার্ক সিসিআই (বাংলাদেশ) নির্বাহী কমিটির সদস্য শাফকাত হায়দারের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের উপ-পরিচালক প্রকৌশলী মো. মাহফুজুল আলম, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ড. আব্দুল্লাহ আল মামুন, র‌্যাবের আইন ও মিডিয়া শাখার পরিচালক খন্দকার আলী মঈন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের কেন্দ্রীয় ডিজিটাল কমার্স সেলের উপসচিব সাঈদ আলী, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের (ডিএনসিআরপি) উপ-পরিচালক (ঢাকা বিভাগ) মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার, বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সিইআরএম পরিচালক রওশন মমতাজ এবং  ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রোবটিক্স অ্যান্ড মেকাট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ড. লাফিফা জামাল।

সভায়  ই-বর্জ্য ঝুঁকি থেকে বাংলাদেশকে স্মার্ট হিসেবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরতে সরকারি-বেসরকারি যৌথ অংশীদারিত্বে কাল-বিলম্ব না করে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণে গুরুত্বারোপ করেন বক্তারা। বক্তাদের পরামর্শ সরকারের যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরে এনে বিআইজেএফ আগামীতে স্মার্ট সংবাদিকতায় ভূমিকা পালন করবে এমন প্রতিশ্রুতি দিয়ে গোলটেবিল আলোচনায় উপস্থিত সকলের প্রতি ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সাব্বিন হাসান।

আলোচনায় অংশ নিয়ে ই-বর্জ্য নিয়ে নিজেদের অবস্থান তুলে ধরেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সাবেক সভাপতি শহীদ উল মুনির, গ্লোবাল ব্র্যান্ড প্রাইভেট লিমিটেড চেয়ারম্যান আব্দুল ফাত্তাহ, স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম, জেআর রিসাইক্লিং/সলিউশন ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম এ হোসেন জুয়েল, এইচপি বাংলাদেশ বিজনেস ডেভেলপমেন্ট ম্যানেজার (ভোক্তা পিএস) কৌশিক জানা, আসুস বাংলাদেশের কান্ট্রি প্রোডাক্ট ম্যানেজার আসাদুর রহমান সাকি, লেনোভো ভারত এর আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক (বাণিজ্যিক ব্যবসা) সুমন রায়, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার নাজমুস সালেহীন, ইউসিসি’র হেড অব সেলস শাহীন, স্মার্ট টেকনোলজিসের সেলস ডিরেক্টর মুহাহিদ আল বেরুনী সুজন।

সভায় অধ্যাপক লাফিফা জামাল বলেন, আজকের ইলেকট্রনিক্স পণ্যেই আগামী দিনের ই-বর্জ্য। ল্যাপটপ-কম্পিউটারের চেয়ে কি-বোর্ড, মাউস থেকে ই-বর্জ্য বেশি হচ্ছে। তাই এগুলো কোথায় ফেলতে হবে তা নির্ধারণ করতে হবে। তাই এ বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা দরকার ।

ডিএনসিআরপি উপ-পরিচালক মঞ্জুর মোহাম্মাদ শাহরিয়ার বলেন, ব্যাটারিচালিত গাড়ি থেকে দেশে ভয়াবহ মাত্রায় সিসা ছড়াচ্ছে। তাই সবার আগে উৎপাদকদের দায়বদ্ধতার মধ্যে আনতে হবে।

বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং অনুষদের সিইআরএম পরিচালক রওশন মমতাজ বলেন, বুয়েট থেকে ই-বর্জ্য ব্যবস্থাপনা নিয়ে গবেষণা করে ই-বর্জ্য আইন ২০০১ এর একটি খসড়া করা হয়েছে। রি-ইউজ মনেই ই-বর্জ্য নয়। তাই আমি একে ই-রিসোর্স হিসেবে অভিহিত করতে পারি। এজন্য এটি সংরক্ষণ ও ব্যবস্থাপনাটা এখানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। জাপান রিসাইকেল ই-বর্জ্য দিয়ে গোল্ড মেডেল তৈরি করতে চায়। হাইটেক পার্কে যদি রিসাইকেল প্ল্যান্ট করা হয় তবেই এটি সম্পদ হিসেবে উপযোগ সৃষ্টি করবে।

র‌্যাবের আইন ও মিডিয়া শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, সব স্টেক হোল্ডারদের সমন্বিত উদ্যোগ নিলে ই-বর্জ্য ঝুঁকি কমানো সম্ভব। তবে এক্ষেত্রে জনসচেতনতার বিকল্প নেই।

স্মার্ট টেকনোলজিস (বিডি) লিমিটেড ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম বলেন, আমাদের ইন্টারনাল ই-ওয়েস্ট ব্যবস্থাপনা নিয়ে ভাবছি। বাইরের দেশ থেকে ই-বর্জ্য বাংলাদেশে ডাম্পিং করা হচ্ছে। পাকিস্তানভিত্তিক কিছু ব্যবসায়ী বাংলাদেশের কিছু অসাধু ব্যবসায়ী এই কাজ করছে।

গোলটেবিল বৈঠকে খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

News Link

Like this article?

Share on Facebook
Share on Twitter
Share on Linkdin
Share on Pinterest

Leave a comment

Scroll to Top